রিজার্ভ

বিপিএম৬ পদ্ধতিতে রিজার্ভ ২৩.২৬ বিলিয়ন

আইএমএফ পদ্ধতি মেনে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার (২ হাজার ৩২৬ কোটি)।

১০ই আগস্ট বৃহস্পতিবার এ হিসাব প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতেও রিজার্ভের যে হিসাব করেছে, সেই হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার ( ২ হাজার ৯৫৩ কোটি)।

গত জুলাই মাসে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব মতে রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার।

দীর্ঘদিন ধরে আইএমএফ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ৬ (বিপিএম৬) পদ্ধতি অনুসরণ করে রিজার্ভের হিসাব করতে বাংলাদেশ সরকার তথা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পরামর্শ দিয়ে আসছিল।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুদ থাকতে হয়। গত মে মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৬ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়। সে হিসাবে ২৩ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের কম সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

আমদানি দায় পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ঘাটতি দেখা দেয়। সেই ঘাটতি সামাল দিতে গত জানুয়ারিতে আইএমএফের কাছে ৪৭০ কোটি (৪.৭ বিলিয়ন) ডলার ঋণ পেতে সমঝোতা করে বাংলাদেশ।

ঋণ সমঝোতার পর আন্তর্জাতিক এ সংস্থার পরামর্শ আসে- বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। আইএমএফের সেই পরামর্শ মানতে রাজি হয় বাংলাদেশ।

স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংক মোট রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করে আসছিল। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে আইএমএফ এই হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাদের যুক্তি, বাংলাদেশ ব্যাংক মোট যে রিজার্ভের হিসাব দিচ্ছে, তাতে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ), শ্রীলঙ্কাতে দেয়া ২০ কোটি ডলার ঋণসহ অন্য কয়েকটি প্রকল্পে বিনিয়োগকে অন্তর্ভুক্ত দেখানো হচ্ছে।

আইএমএফ বলছে, এটা রিজার্ভের নিট বা প্রকৃত হিসাব নয়। কেননা, এই মুহূর্তে প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ সরকার রিজার্ভ থেকে যে অর্থ অন্য খাতে বিনিয়োগ করা হয়েছে বা ঋণ দেয়া হয়েছে, তা ব্যবহার করতে পারবে না। আপৎকালীন সংকট মোকাবিলার জন্য রিজার্ভের যে অর্থ তাৎক্ষণিক খরচ করা যাবে, সেটাকেই প্রকৃত রিজার্ভ হিসেবে হিসাব করতে বলে আসছিল আইএমএফ।

এতদিন বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি আমলে না নিলেও ঋণের শর্তের সঙ্গে এটি যুক্ত করে দেয়ায় আইএমএফের এটি এখন বাধ্য হয়ে মেনে নিতে হচ্ছে সরকারকে।

আইএমএফের ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল- রিজার্ভের নিট হিসাব প্রকাশ করতে হবে। এক্ষেত্রে মানতে হবে বিপিএম-৬ ফর্মুলা।

বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলো নিয়ে সাপ্তাহিক যে তথ্য প্রকাশ করে, তাতে ‘গ্রস রিজার্ভ’ এবং ‘বিপিএম-৬ ফর্মুলা অনুসরণ করে রিজার্ভ’- দুই ধরনের তথ্যই প্রকাশ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Main Menu