BUYING | INSIDE | Marketplace

ফুডপান্ডা বিক্রি করে দিচ্ছে ডেলিভারি হিরো

ফুডপান্ডা যার মূল প্রতিষ্ঠান ডেলিভারি হিরো একাধিক এশিয়ান দেশে তাদের ব্যবসা বিক্রি করছে, কিন্তু বাংলাদেশ তালিকায় নেই। এতে বাংলাদেশে ফুডপান্ডার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

ডেলিভারি হিরো হলো বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অনলাইন ফুড ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম। ২০২২ সালের হিসেবে, প্রতিষ্ঠানটির সারা বিশ্বে ৭০টিরও বেশি দেশে ব্যবসা রয়েছে।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ডেলিভারি হিরো ঘোষণা করে যে তারা সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন এবং থাইল্যান্ডে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিক্রির জন্য আলোচনা করছে। তবে বাংলাদেশ, হংকং, তাইওয়ান ও পাকিস্তানের নাম নেই তালিকায়।

এই ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশে ফুডপান্ডার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে ডেলিভারি হিরো বাংলাদেশেও তাদের ব্যবসা বিক্রি করে দিতে পারে।

ফুডপান্ডা ২০১৬ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি দেশের সব জেলা শহরেই সেবা দিচ্ছে। ৫০,০০০ বেশি রেস্তোঁরা ও খুচরা ব্যবসা এবং এক লাখেরও বেশি ফ্রিল্যান্স রাইডার এই ডিজিটাল সেবায় যুক্ত রয়েছে।

তবে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে এখনও লাভজনক হয়নি। ২০২২ সালের বার্ষিক বিবৃতি অনুসারে, ফুডপান্ডা এবং এর অন্যান্য ব্যবসায়িক শাখাগুলি বাংলাদেশে ৭৪ মিলিয়ন পাউন্ড তথা প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা ক্রমযোজিত লোকসান গুনেছে।

বাংলাদেশে ফুডপান্ডার ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। প্রথমত, ডেলিভারি হিরো সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা রাখবে নাকি বিক্রি করে দেবে। দ্বিতীয়ত, যদি ডেলিভারি হিরো বাংলাদেশে ব্যবসা বহাল রাখে, তাহলে তাদের প্রতিষ্ঠানটির লাভজনক করতে হবে। অন্যথায় এক সময় তারা বাংলাদেশের বাজার থেকেও প্রস্থান করতে পারে।

তৃতীয়ত, বাংলাদেশের ফুড ডেলিভারি সেক্টরের প্রবৃদ্ধিও ফুডপান্ডার ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করবে। যদি এই সেক্টর দ্রুত প্রবৃদ্ধি হয়, তাহলে ফুডপান্ডার জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। কিন্তু যদি এই সেক্টরের প্রবৃদ্ধি ধীর হয়, তাহলে ফুডপান্ডার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি হতে পারে।

ফুডপান্ডার ইতিহাস

ফুডপান্ডা হলো একটি অনলাইন খাবার ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম যা রালফ ওয়েনজেল, রোহিত চাড্ডা, বেন বাউয়ের এবং ফেলিক্স প্লগ দ্বারা ২০১২ সালে সিঙ্গাপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কোম্পানিটি প্রথমে লুকাস নাজেল এবং রিকু ওয়েডার দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল।

ফুডপান্ডা ২০১৪ সালে পাকিস্তানি প্রতিদ্বন্দ্বী ইট অই কিনে নেয়। ২০১৬ সালে, কোম্পানিটি তাদের ডেলিভারি ক্লাব ব্যবসা রাশিয়ার mail.ru কে বিক্রি করে দেয়। একই বছর, ডেলিভারি হিরো নামক একটি জার্মান কোম্পানি ফুডপান্ডা গ্রুপকে কিনে নেয়।

২০১৭ সালে, ওলা ক্যাবস ভারতে ফুডপান্ডার ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করে। বর্তমানে, ফুডপান্ডা এশিয়া, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা এবং ইউরোপের ৫০টিরও বেশি দেশে ব্যবসা পরিচালনা করে।

ফুডপান্ডার মূলধন

ফুডপান্ডা ২০১৩ সালের এপ্রিলে ২০ মিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক বিনিয়োগ পেয়েছিল। এরপর কোম্পানিটি আরও বেশ কয়েকটি রাউন্ডের বিনিয়োগ পেয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছে:

  • ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ৮ মিলিয়ন ডলার
  • ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২০ মিলিয়নের বেশি ডলার
  • ২০১৪ সালের আগস্টে ৬০ মিলিয়ন ডলার

ফুডপান্ডার লোগো

ফুডপান্ডা ২০১৭ সালে তাদের লোগো পরিবর্তন করে। আগের লোগোটি ছিল কমলা রঙের, কিন্তু নতুন লোগোটি গোলাপি রঙের। এই পরিবর্তনের কারণ সম্পর্কে কোম্পানিটি বলেছে যে তারা তাদের নতুন লোগোটিকে আরও স্মরণীয় করে তুলতে চেয়েছিল।

ফুডপান্ডার ভবিষ্যৎ

ফুডপান্ডা একটি দ্রুত বর্ধনশীল কোম্পানি। ২০২২ সালে, কোম্পানির রাজস্ব ছিল প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। ফুডপান্ডা বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন খাবার ডেলিভারি প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে একটি। কোম্পানির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলে মনে হচ্ছে, তবে কোম্পানিটিকে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে হবে।

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া Reuters

Leave a Reply

Main Menu